Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্ষায় উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি

চট্টগ্রামে কাজে সমন্বয়হীনতায় দুর্ভোগ

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বর্ষার আগেই পোর্ট কানেকটিং (পিসি) রোডের সম্প্রসারণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফলে বন্দরনগরীর গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে দুর্ভোগের অবসান হচ্ছে না। প্রতিদিন আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী শত শত ভারী যানবাহন সড়কে আটকা পড়ছে।

ফলে আশপাশের সড়কগুলোতেও হচ্ছে তীব্র যানজট। সড়কের দুইপাশের লাখ লাখ বাসিন্দা আর গণপরিবহনের যাত্রীদের দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। মহানগরীর আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলছে সংস্কার কাজ। উন্নয়ন কাজের জন্য কয়েকটি সড়কে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসা তাদের পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য যত্রতত্রই রাস্তা কাটাকাটি অব্যাহত রেখেছে। ফলে আসন্ন বর্ষায় নগরবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ডে সমন্বয়ের তাগিদ দেয়া হলেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। উন্নয়ন কাজে সমন্বয়হীনতায় নগরবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠছে।

তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে পিসি রোডের সম্প্রসারণ কাজ চলছে। কথা ছিল বর্ষার আগেই কাজ শেষ করা হবে। তবে এখনও পর্যন্ত যেই গতিতে কাজ চলছে তা শেষ হতে আরও বছর পার হয়ে যেতে পারে। সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের বড়পুল থেকে বন্দর মোহাম্মদিয়া মাদরাসা পর্যন্ত একাংশে পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে। বাকি সড়কে এখনও চলছে সম্প্রসারণ কাজ। চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন নিমতলা থেকে অলঙ্কার পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এ সড়কের উপর ইট, বালি আর কাদা মাটির স্তুপ।

পুরো সড়কের বিশাল অংশজুড়ে রাখা হয়েছে অকেজো ট্রাক, লরি, বাসসহ হরেক যানবাহন। নির্মাণ সামগ্রী রেখেও অনেক এলাকায় সড়ক দখল করা হয়েছে।সড়কের কোথাও বড় বড় গর্ত আবার কোথাও উঁচু মাটি-পাথরের ঢিবি। এর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে চলছে ভারী যানবাহন। রোদ হলে ধুলায় ধূসর পুরো এলাকা। আর বৃষ্টি হলে কাদা পানিতে সয়লাব সড়ক এবং আশপাশের দোকানপাট, বাসাবাড়ি। দীর্ঘ যন্ত্রণার পর ঈদের আগে আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের একাংশ খুলে দেয়া হয়।

অন্য অংশে চলছে সংস্কার কাজ। বর্ষায় সড়কটি বুক সমান পানিতে তলিয়ে যেত। আর স্বাভাবিক জোয়ারে হতো কোমর সমান পানি। এ দুর্ভোগের অবসানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। সড়কটি উঁচু করার পাশাপাশি দুই পাশে নালা তৈরীর কাজও চলছে।

ইতোমধ্যে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, খুব শিগগির এ সড়কের কাজ শেষ হয়ে যাবে। পিসি রোডের কাজও দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্ভোগ যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই কাজ দ্রুত সময়ে শেষ করা হবে। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি সড়কের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজ নিজেই তদারক করছেন বলে জানান তিনি।

আগ্রাবাদ থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে সিডিএ। নির্মাণ কাজের জন্য নগরীর প্রধান সড়কের কাটগড় থেকে সিমেন্ট ক্রসিং মোড় পর্যন্ত অংশে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। পাইলিংয়ের জন্য সড়কের মাঝ বরাবর অংশ ঘেরাও করে সরু দুইপাশে চলছে যানবাহন। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কাটগড় ও পতেঙ্গা এলাকায় গড়ে ওঠা বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালগুলোর বন্দরমুখী ভারী যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরুর আগে বিকল্প হিসেবে আউটার রিং রোড খুলে দেওয়ার কথা ছিল। তবে এখনও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আউটার রিং রোডটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।

জুনের মধ্যে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা থাকলেও কাজ শেষ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী কাজি হাসান বিন শামস। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সড়কের প্রায় আট কিলোমিটার অংশে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে বর্ষার মধ্যেও কাজ করতে হবে। পুরো কাজ শেষ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে তবে আগামী দুই মাসের মধ্যে সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে নগরীর ব্যস্ততম বহদ্দারহাট থেকে সিঅ্যান্ডবি হয়ে মোহরা কালুরঘাট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা এখনও বেহাল। তিন বছরের বেশি সময় ধরে সড়কের একপাশ বন্ধ রেখে পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য খোঁড়াখুুঁড়ি করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। ওয়াসার কাজ শেষ হওয়ার পর সড়কটি কাটছে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ। তবে ওয়াসার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে পাইপ লাইনের কাজ শেষে সড়কটি সিটি কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বাবত ক্ষতিপূরণের অর্থও পরিশোধ করা হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীরা জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু হবে। তবে কাজ শুরু হতে চলতি বর্ষা শেষ হয়ে যাবে। ফলে এ বর্ষায়ও ওই এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। নগরীর অক্সিজেন, বায়েজিদ, সিমেন্ট ক্রসিং থেকে প্লোটিলা জেটি পর্যন্ত সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কে সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজ চলছে। সড়ক বিভাগের বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী সেতু পর্যন্ত সড়কের সংস্কার কাজও এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। ঈদের আগে সড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলেও এখনও উন্নয়ন কাজ চলছে।

অন্যদিকে পুরো নগরীতে খোঁড়াখুঁড়ি আর রাস্তা কাটাকাটি অব্যাহত রেখেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। সিটি কর্পোরেশন রাস্তা সংস্কার করার দুই দিনের মাথায় ওই রাস্তা কেটে ফেলছে ওয়াসা। দুই সংস্থার মধ্যে উন্নয়ন কাজের সমন্বয় করতে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। সংস্থার কর্মকর্তারাও জনদুর্ভোগ লাঘবে উন্নয়ন কাজে সমন্বয়ের উপর গুরুত্বারোপ করছেন। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে তার উল্টোটা।

কখন কোন সড়কে ওয়াসা খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করবে তা কেউ জানে না। সড়ক থেকে শুরু করে নগরীর অলিগলিতেও পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য চলতি বর্ষা মৌসুমেও ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিতে রাস্তা কাটা হচ্ছে। এতে করে জনদুর্ভোগ কিছুটা কমছে। এরপরও উন্নয়নের জন্য সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নিতে তিনি নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বর্ষা

৩ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->